1. [email protected] : adminbackup :
  2. [email protected] : কক্স সময় টিভি : কক্স সময় টিভি
  3. [email protected] : Somoy@23 :
সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন
Latest Posts

গর্জনিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ডন’ ডাকাত শাহিন’ কে বাঁচাতে দৌড়ঝাঁপ চালাচ্ছেন কক্সবাজার পৌরসভার কর্মকর্তা নিরুপণ

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত : সোমবার, ৪ আগস্ট, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক।
কক্সবাজার-বান্দরবান সীমান্তে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে গরু পাচার দীর্ঘদিন ধরেই ডাকাত শাহীনের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এই সিন্ডিকেটটি শুধুমাত্র সীমান্তবর্তী এলাকার অপরাধী চক্র দ্বারা নয়, বরং তাদের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী ও প্রশাসনিক মহলে গভীর শিকড়। এর মধ্যে মুখ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে উঠে এসেছে ডাকাত শাহীনের নাম। যিনি গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। তবে জেল থেকেই তার নির্দেশে সক্রিয় রয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুত্রে জানা গেছে,গত ৫ জুন যৌথ বাহিনীর এক অভিযানে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন শাহীন। অভিযানে তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ৩১টি বার্মিজ গরু ও একটি ছাগল। একই সঙ্গে তার বাড়ি ও আস্তানায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে বেরিয়ে আসে, শাহীন শুধু সীমান্ত চোরাচালানি নয়, বরং পুরো একটি অপরাধ সিন্ডিকেটের নেতা।

আর এ নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ ও বানোয়াট মামলায় বিজিবির বিরুদ্ধে অপপ্রচারে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী চোরাকারবারি গ্রেফতারকৃত নুরুল আবসার। মূলত তাদের টার্গেট বিজিবিকে নয়, যৌথবাহিনীর অপারেশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে শাহিনের জামিনই মূল উদ্দেশ্য।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাহীনকে গ্রেপ্তারের পরও থেমে থাকেনি তার অপতৎপরতা। শাহীন জেলে বসেই তার বিশ্বস্ত লোকদের মাধ্যমে সীমান্তে গরু চোরাচালানের নির্দেশ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার হয়ে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে অন্তত ২২ জন সদস্যের একটি চক্র। নতুন করে সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছে নিরুপম শর্মা নামের এক ব্যক্তি, যার নেতৃত্বে সীমান্তে আবারও গরু প্রবেশের চক্র গড়ে উঠছে। মাঠ পর্যায়ের নেতৃত্বে ছিল নুরুল আবছার ওরফে ডাকাত আবছার, যিনি সম্প্রতি অস্ত্রসহ বিজিবির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য, ভুক্তভোগী ও অনুসন্ধান বলছে, সীমান্তের চক্রটি চোরাচালান বন্ধে বিজিবির অভিযানে ক্ষিপ্ত হয়ে আদালতে পাল্টা মামলা দিয়ে অভিযানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে। তারা ডাকাত শাহীনকে নির্দোষ প্রমাণ করতে মিথ্যা মামলার আশ্রয় নিচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে এক মাস পর আবছার নিজেই আদালতে গরুগুলোর মালিকানা দাবি করে মামলা করেন। কিন্তু তদন্তে জানা যায়, যেখান থেকে গরু জব্দ হয়, সেই গর্জনিয়া এলাকায় তার বাড়ি নয়। তার বাড়ি অনেক দূরে, রামুর বোমাংখিল গ্রামে। অপরদিকে সাক্ষীদের জবানবন্দি থেকে উঠে আসে, তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আবছার মিথ্যা মামলা করিয়েছেন।

প্রতিবেদকের হাতে থাকা নথি অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে জব্দ হওয়া গরুগুলো যথাযথভাবে আদালতের নির্দেশে বিজিবির মাধ্যমে সরকারি হেফাজতে রাখা হয় এবং এরপর নিলামে বিক্রি করে অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হয়। এসব কার্যক্রম ছিল সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও নথিভুক্ত। তবুও চোরাচালান সিন্ডিকেটটি সেই ঘটনাকে বিকৃত করে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এই সিন্ডিকেটের পেছনে রাজনৈতিক ছত্রছায়ার বিষয়টিও উঠে এসেছে।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, এক সময় শাহীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় কিছু নেতার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে, পরবর্তীতে বিএনপির স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করে। এই রাজনৈতিক কৌশলের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরেই সে প্রশাসনিক নজরদারির বাইরে থাকতে পেরেছে।

বিজিবির রামু সেক্টরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে শাহীন কারাগারে থাকলেও তার নিয়ন্ত্রণে ২২ জন সক্রিয় সদস্য সীমান্তে চোরাচালানে নিযুক্ত রয়েছে। তাদের সহায়তা করছে স্থানীয় দালাল মাসুদ ও নিরুপম শর্মার মতো দুর্ধর্ষ চক্র। এদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও এখনো তারা গা-ঢাকা দিয়ে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। রয়েছে বিপুল সম্পদ, বাড়ি, গাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এসব অর্থমূল্য অর্জিত হয়েছে সীমান্তপথে চোরাচালানের মাধ্যমে। এদিকে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, শাহীন তার জামিন নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে ঢাকায় বড় অঙ্কের অর্থ বাজেট করেছে। জামিন ব্যর্থ হলে বিকল্প পথে মামলার ভিত্তি দুর্বল করতে এবং নিজেদের পক্ষে জনমত তৈরি করতে নানামুখী প্রচারণা চালাচ্ছে।

তাদের তৈরি করা নথিপত্রে শাহীনের বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডের ছবি ব্যবহার করে তাকে ‘সাধু’ হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এসব ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর এমদাদুল হক বলেন, ‘চোরাচালান বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সফল অভিযানের পরপরই এসব অপরাধচক্র প্রশাসনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও অপপ্রচার চালায়। এতে প্রশাসনের মনোবল ভেঙে যায়, যার সুযোগ নিয়ে অপরাধীরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।’

বিজিবির রামু সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা শাহীনের নেতৃত্বে সক্রিয় সিন্ডিকেটের সদস্যদের চিহ্নিত করেছি। যারা সীমান্তে চোরাচালান চালাতে চায়, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। আইনগত প্রক্রিয়ায় তাদের সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শাহীনকে গ্রেপ্তারের পর সীমান্তে কিছুদিন চোরাচালান বন্ধ ছিল। কিন্তু এখন আবার সক্রিয় হয়ে উঠছে। আমরা নিয়মিত নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
অফিস: লিংক রোড সদর কক্সবাজার © All rights reserved © coxsomoytv.com
ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট @ Themes Seller.