ইফতেখারুল ইসলাম জুয়েলঃ
কক্সবাজারে সুপেয় পানির সংকট প্রতিরোধে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার নিশ্চিতকরনণর দাবি নাগরিক সমাজের
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ৫ জুন উপলক্ষে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সিসিএনএফ যৌথ আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কোস্ট ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক ও সিসিএনএফ এর সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম ও মিজানুর রহমান বাহাদুরের যৌথ সঞ্চালনায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ৪ জুন, রবিবার সকাল ১০.৩০ টা থেকে ১২ টা অবধি মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন কক্সবাজার জেলার স্থানীয় জনসাধারণ।
মানবন্ধনে উপস্থিত ছিলেন , বাপা কক্সবাজার জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযুদ্ধা ফজলুল কাদের চৌধুরী, কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুজিবুল ইসলাম, জেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বাপা সহ-সভাপতি জনাব এইচ এম এরশাদ, ইপসার প্রজেক্ট ম্যানাজার মোঃ হারুন, শিক্ষক এবং বিশিষ্ট লেখক মকবুল আহমেদ, সাংবাদিক নুরুল ইসলাম, অর্নব সংস্থার প্রধান নির্বাহী পরিচালক নুরুল আজিম, হেল্প দ্যা পিউপল বাংলাদেশ এইসটিপিবি এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এম ইফতেখারুল ইসলাম জুয়েল,একলাবের প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান, রুপালী সৈকতের বার্তা সম্পাদক জনাব নেজাম উদ্দিন, উন্নয়ন কর্মী সুরাইয়া নাসরিন, সমাজ কর্মী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কামাল উদ্দিন আহম্মেদ পিয়ারো, আদিবাসী নারী উন্নয়ন কর্মী মার্টিন, স্বপ্নজালের নির্বাহী পরিচালক শাকির আলম, কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমির সাধারন সম্পাদক রুহুল কাদের বাবুল, কোস্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোস্তফা কামাল আকন্দ, আরো উপস্থিত ছিলেন পরিবেশবিদ,শিক্ষক ও সাংবাদিকবৃন্দসহ সিসিএনএফ এর অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন এনজিওর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে পরিবেশ রক্ষা এবং সুপেয় পানির সংকট মোকাবেলায় প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা দাবি জানিয়েছেন জেলার সচেতন নাগরিক সমাজ। বিশেষ করে উখিয়া- টেকনাফে সুপেয় পানির সংকট মোকাবেলায় ভু-উপরিস্থ পানি ব্যবহারের উৎস খুঁজে বের করা জরুরী বলে মনে করেন বক্তারা।
পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত এর তলদেশ আজ পলিথিনে ভরপুর। পৌর এলাকায় যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। সারাদেশ যেন আবর্জনার ভাগাড়। সরকার প্লাস্টিক বিরোধী আইন করেছে। কিন্তু আইনের সঠিক বাস্তবায়ন নাই।
পলিথিন কারখানাগুলো অবৈধভাবে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এখন থেকে পলিথিন উৎপাদনের জন্য কারখানার অনুমোদন বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। সরকারের প্রণীত আইন বাস্তবায়ন করা হোক। বিকল্প সৃষ্টির মাধ্যমে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
জনাব ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, ভূগর্ভস্থ পানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে না হলে অচিরেই পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি নতুন আরেকটি মানবিক সংকটের মুখোমুখি হতে হবে। তাছাড়া প্লাস্টিক ব্যবহার পরিপূর্ণভাবে বন্ধ করতে অবশ্যই সরকারকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।
জনাব মুজিবুল ইসলাম বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত মহলের উদাসীনতার কারনে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভূপৃষ্ঠস্থ পানি পরিশোধন করে এর সঠিক ব্যবহার করলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ কক্সবাজারের সকল পর্যায়ে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমে আসবে এবং পরিবেশ সুরক্ষা হবে। তাই সরকার ও সংশ্লিষ্ঠ সকলকে উদ্যোগী হতে হবে।
বাপা সহ-সভাপতি জনাব এইচ এম এরশাদ বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে এ সংকট কোনভাবেই নির্মুল করা সম্ভব নয়। পলিথিন উৎপাদন বন্ধ করতে হলে লাইসেন্স বাতিল করতে হবে এবং নতুন লাইসেন্স দেয়া বন্ধ করতে হবে। এছাড়া তিনি পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিতে পরিবেশ সুরক্ষা পুলিশ ফোর্স গঠনের দাবি জানান।
বক্তারা আরো বলেন,প্লাস্টিক ব্যবহার শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে। পানির যত্রতত্র ব্যবহার বন্ধ করে ভূগর্ভস্থ সুপেয় পানির বিকল্প হিসেবে ভুপৃষ্টের পানি শোধন করে যেমন সাগর, নদী ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করা এবং অনতিবিলম্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ব্যবস্থা চালু করতে হবে। প্লাষ্টিক উৎপাদন এবং বিপনন বন্ধ করতে হলে এর সঠিক নীতিমালা বাস্তবায়ন করা হউক। প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের আন্দোলনের সাথে সরকারের যারা আইনপ্রনয়নকারী এবং নীতিনির্ধারকদের সম্পৃক্ত করা জরুরী।
Leave a Reply